Thursday, February 08, 2007

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ০৮

ভেতর থেকে দুমড়ে-মুচড়ে উঠে একটা অব্যক্ত অনুভূতি। একটা অবাক ভালোলাগা উড়িয়ে নিয়ে যায়, নিষিদ্ধ নগরীর বদ্ধ হেরেমের সুউচ্চ টাওয়ারে। সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকা সেন্ডউইচে আধা কামড়ে বাগড়া বসায় ঝরে পরা তুষার কণা। বিদঘুটে ঠান্ডা বাতাস হাড়ে কাঁপন ধরায় অহরহ। পদযুগল এগিয়ে চলে নিরুদ্দেশে। মুঠোফোনের সাইলেন্ট বীপে শুরু হয় বিরক্তিকর কথোপকথনের শব্দ। ভূমিকাহীন খেয়ালীপনা চলে সময়ের সাথে। একে একে গড়িয়ে যায় ট্রামের লোহার চাকা। পেছনে পরে থাকে খিলখিল শব্দের কলকল ধ্বনি। বয়ে যায় সময়, তেড়ে যায় বাস। ঠান্ডার প্রবল প্রকোপে এগিয়ে যেতে যেতে ভাবি, কী হলো এইটা?

Tuesday, February 06, 2007

ব্লুট অরাঙ্গেন - রক্তিম কমলার বস্ত্রাহরণ

পোস্টের শিরোনাম কিংবা ফটুক দেখে এমন ভাবার দরকার নেই যে আমি কমলার ব্যবসায় কোমরে পড়নের লুঙি বেন্ধে নেমেছি। তবে লোকজনের সে রকম খাইছলত, ভাবতেও পারেন আমি পাশের গ্রামের সুন্দরী কমলার গুনকীর্তনে করতাল বাজানোর জন্য চান্স খুঁজতেছি! সেক্ষেত্রে আমার কিছুই বলার নেই, তবে লেখার আছে।

কমলার সাথে আমার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুবিধার না। তার ভেতরের সৌন্দর্য উপভোগ করাতো দূর অস্ত, যতোবার চেষ্টা করেছি তাকে নিরাবরণ করতে ততোবারই আমার চোখ দিয়ে বয়ে গেছে গঙ্গা-যমুনা! আমিও চোখ মুছতে মুছতে তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য রাস্তা ধরেছি।

একবার এক বন্ধুর বাসার বসার ঘরে পা ছড়িয়ে টেলিভিশন দেখছি। যথারীতি পাশে ছিলো কমলা এবং আমার মহিলা বন্ধুটি। এইবার বন্ধুটির দিকে একটু কেমন করে তাকাতেই বুঝে গেলো কি বলছি। কমলার 'বস্ত্রহরণ', মাথা ঝাঁকিয়ে জানালো আমাকে সাহায্য করা তাঁর পক্ষে সম্ভব না। নিজে পারলে কর না পারলে বইয়া থাক!

দেস না ভাই, এমুন করস ক্যা?
:- এ্যাঁ... আমি খুইলা দিমু আর মজা লুটবি তুই, হইবো না...
আরে দেস না, আমি পারলে কি তোরে কই?
:- না পারলে গিয়া বিয়া কইরা ল, আমারে কস ক্যা? যা ফুট!

শেষমেষ অবশ্য বন্ধুটারে অতি কষ্টে পটিয়েছিলাম কমলার আবরণ খুলে আমার সামনে উপস্খাপন করতে। আর আমিও মহা সুখে, ডিভাইন আনন্দে কমলার স্বাদ উপভোগ করেছিলাম... আহা!!

আজকে এক নতুন কমলার সাথে পরিচয় হলো আমার। আমার বন্ধুটি তো এখন আমার পাশে নেই আমাকে সাহায্য করার জন্য। বাধ্য হয়ে নিজেই হাত চালালাম। অপরিপক্ক ভাবে এদিক ওদিক হাত চালাতেই ঘাবড়ে গেলাম - ওকি রক্ত বেরোয় যে! কমলার আগে আমিই মারলাম চিৎকার সজোরে...।

আমার চিৎকার শুনে একজন বললো। ভয়ের কিছু নাই, এটাই স্বাভাবিক। আমি আকাশ থেকে পড়লাম হলদে জিনিষের জায়গায় লাল জিনিষ দেখলে ঘাবড়ানোটাই স্বাভাবিক জানতাম, এখন শুনছি উলটোটা... ঘটনা কি?

অবশেষে হাত টাত মাখিয়ে, এখানে ওখানে 'রক্ত' লাগিয়ে তারপর উপভোগ করা হলো আমার রক্তিম কমলা। একটু টক টক লাগে, কিন্ত অসম্ভব রকমের দারুণ স্বাদ। দেখতে সভাবিক কমলার মতোই শুধু ভেতরটা হলদে না হয়ে লালচে।

ক্ষুধা ছিলো প্রচন্ড, খেয়ে নিয়েছি গোটা কয়েক। খাওয়ার পর ভাবলাম এবার শেয়ার করি সবার সাথে আমার কমলা খাওয়া!!

Sunday, February 04, 2007

অপারেশন ক্লীনহার্ট!

২০০১ এর নির্বাচনের পরের ঘটনা। রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টের জলপাই রঙের দোস্ত ঢাকায় আসছে। মুলাকাত স্খল কলাবাগানের হেলভেশিয়া। রাজেন্দ্্রপুরের আরেক জলপাই চিঙড়ি মাছের মাথার মতো জলপাই জিপে হাজির। সাথের আর্কিটেক্ট পড়ুয়া দোস্ত ছাড়া বাকি তিনজনই আমরা মাশাল্লাহ্ তালপাতার সেপাই। তবে বুয়েটের ভাবি আর্কিটেক্ট চান্দুরে গালিভারের বংশধর বলে ঠিক চালিয়ে দেয়া যায়।

আমি ব্লাডি সিভিলিয়ান হলেও তৎকালীন লেফটেন্যান্ট চাঙ্কি দুজনের ভাবসাবই আলাদা ছিলো অধ:স্খনদের কাছে। মি. রাজেন্দ্্রপুর যেভাবে নামলো গাড়ি থেকে, ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। আর্কিটেক্টরে বলি, দোস্ত দিমু নাকি দৌড়?

আমি আগেই বলেছি জলপাই রঙরে আমি বড়ই সমীহ করে চলি। কে জানে কোনদিন, কোনদিক দিয়ে ক্লীন হার্টের নামে আমাকেই দুনিয়া থেকে ক্লীন করে দেয় ব্যাটারা। ভয়েডরে থাকাই স্বাভাবিক। নি:শ্বাসের নাই বিশ্বাস। এক মিনিটের নাই ভরসা গাইতে গিয়া ডেখা গেলো ফিরোজ সাঁই-এর মতো আমিও নাই!

হেলভেশিয়ায় বসার পর কয়েক দফা বার্গার আর কোলা খতমের পর, কয়েক প্রস্ত কুশলাদি আদান-প্রদানের পর কথায় কথায় মি. রাজশাহী তাঁর গল্প বলা ধরলো।

স্খানীয় কোন এক চেয়ারম্যানের পোলার বিরুদ্ধে (লোকাল) মাস্তানীর অভিযোগ। এমনকি বাপ নিজেও পোলার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। গ্রামের কোন এক লোকের সুন্দরী বউকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। ওকে ধরে আনা হয়েছে, টীমের ইনচার্জ ছিলো আমার শান্ত-শিষ্ট দোস্তটা। গুঁতালেও যে টু শব্দও সহজে বের করতে চায় না, সে।

এ পর্যায়ে আমি হাসি। থাম শালা, তুই একটা মিশনের চার্জ নিয়া গেছস, তাও মাস্তান ধরতে? ব্যাটা মুখ গম্ভীর করে বলে, তুই জানোস এই আমিই আমাদের ব্যাচে 'সোর্ড অফ অনার' পাইছি!

আর্কিটেক্ট আর মি. রাজেন্দ্্রপুরের ভরসায় মেনে নেই। আবারো শুরু হয় গল্প।

ধরে এনে তাকে জিজ্ঞেস করা হলো-
: তুই অমুকের (নামটা আমার মনে নেই) বউরে তুইলা আনছস?
- জ্বি না স্যার...

: কথা শেষ হবার আগেই থাপ্পর। মিথ্যা কথা কস ক্যা.... ঠিক কইরা ক।
- জ্বি স্যার আনছি।

: (বড়দের কাজ) করছস?
- না স্যার আমি ফুলের টোকাটাও দেই নাই...

: (চরম গালি) পোলা, তাইলে কি পুজা দেওয়ার লাইগা আনছো? (আবার থাপ্পর)
- জ্বি স্যার করছি...।

: হুমম, কয়বার?
- স্যার একবার...

: (এইবার হাঁটুর গিঁঠে লাথি) একবারের লাইগা এতো কিছু করলি, আর আমারেও কষ্ট দিলি। তোরে ধরতে আমার কষ্ট হয় নাই?
- স্যার দুইবার ....

: (আবারো বিচ্ছিরি গালি) পোলা, ঠিক কইরা ক, কয়বার.... (এবার ধমাধম মার)

এবার ঐ ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বলে, স্যার আপনে যতোবার কন ততবারই করছি, তাও আমারে ছাইড়া দেন স্যার। আর জীবনে কোনদিন কোন মাইয়া মাইনষের দিকে ফিরা তাকামু না। ও আমার মা লাগে...।

এইবার আবার শুরু হয় মার। (গালি দিয়ে) তুই তো জাহান্নামের কীট রে, তুই তোর মার লগে এই করস?