Sunday, April 29, 2007

হায়রে ললনা!

: ফিল গ্লুক
: ডাংকে
: ভিডারজেন
: আউফ ভিডারজেন...

ঘটনাটা অনেক আগেরই বটে। বছরের হিসেবে এই ধরুন কাপল অফ ইযারস! বেলজিয়াম বর্ডারের কাছে আইফেল নামক এলাকায় যাযাবরি ঘুর্ণনে সচলায়ন আমি। পাহাড়ি উপত্যকায় একটা ছোট্ট ছিমছাম শহরের (গ্রাম বলাই ঠিক হবে) ট্রেইন স্টেশনের স্টেশন মাস্টারনীর তালমিস্রিহাসিযুক্ত শুভকামনা নিয়ে দৌড়ে গিয়ে কোন রকমে ট্রেইনে উঠলাম।

এই ট্রেইন মিস করলে আরও এক ঘন্টা বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। তবে মন্দ হতো না। জায়গাটা দারুণ। একটা গির্জা আছে বিরাট উঁচু, কয়েকশ বছরের পুরনো। প্রতি আধা ঘন্টায় ঢংঢং করে যখন বেজে উঠে ঘন্টিটা, মনেহয় জনমানবহীন কোন গ্রামে এই বুঝি পাশের সেমেট্রি থেকে খালবাকল ওঠা একদঙ্গল ভূত এসে আমার সাথে রসিকতা শুরু করবে এখনই।

রাস্তার লেভেল থেকে ঘুরানো পথ বেয়ে বেয়ে একেবারে পাহারের উপরে উঠে যাওয়া যায়, যেখান থেকে পুরো গ্রামটাকে দারুণ সুন্দর করে উপভোগ করা যায়। পাহারের গায়ে বাড়িগুলো দেখা যায়, কী করে পাহারের একেক পরতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। সবার নিচে ট্রেইন লাইন, যখন ট্রেইন যায় - ওপরের পাহাড় থেকে মনে হয় কীড়ামতো কোন পোকা বাঁকাত্যাড়া হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

ট্রেইনে উঠে হাঁপাচ্ছিলাম ১৫০ মিটার স্প্রিন্টের কারণে। হাঁপাতে হাঁপাতেই গিয়ে একটা ফোর সিটারের একটায় পা ছড়িয়ে বসে হা করে নি:শ্বাস ফেলছি। হঠাত মনে হলো পাশের সিট থেকে একজোড়া চোখ আমাকে খুব কৌতূহলী হয়ে অনুসরণ করছে। আমি হা করে নি:শ্বাস ফেলতে ফেলতেই সেদিকে তাকালাম... বিনিময় হলো দুইটা কদমফুলহাসি... শুরু হলো নতুন কিছু...

Wednesday, April 25, 2007

বৈশাখ : বাঙালী জাতির সংগ্রামের আরেক আখ্যান

******************************

এবার হাজারদুয়ারীর নতুন সংখ্যা আপলোড করার আগ মূহুর্তে দারুণ কিছু সময় কেটেছে ভোর বেলা, পাখীদের কলতানে। মনে হইছে আমি যেন সেই গ্রামের রাস্তাটা ধইরা একটা ভোঁ দৌড় দিতাছি...

*******************************


চৈত্রসংক্রান্তি, চৈত্র মাসের শেষদিনটির গোধূলী লগ্নে ধূলো উড়িয়ে ঘরে ফেরা রাখাল কি জানে একটু পরেই লাল সূর্যটা ডুবে গিয়ে যে নতুন দিনের আগমনী বার্তা জানাবে সেই নতুন দিনের আগমন ইতিহাস! গাঁয়ের মহাজন কি জানে তাঁর খাজাঞ্চি বগলের নিচে যে লাল মলাটের স্বাস্থ্যবান খাতাটি নিয়ে ঘুরে তার হিসাব বন্ধের পিছনে 'হালখাতা' নামক শব্দটির ইতিহাস! গঞ্জের পাইকারী ব্যবসায়ী কি জানে, তাঁর সকল ক্রেতার কাছ থেকে পুরনো বছরের হিসাব বুঝে নিয়ে যে মুফতে মিষ্টিমুখ করিয়ে দিলো তার পেছনের ঘটনা! কিংবা ওইযে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, অশুদ্ধ বাংলা উচ্চারণে অভ্যস্ত যে ছাত্রটি গায়ে দামী পাঞ্জাবী চড়িয়ে সাতসকালে রমনার বটমূলে গিয়ে হেরে গলায় "এসো হে বৈশাখ, এসো এসো" গানে তাল মেলাচ্ছে সে কি জানে এই গানটির পেছনের ইতিহাস!

আমি নিশ্চিত না হয়েও বলতে পারি, অনেকেই জানে না বৈশাখের ইতিহাস, বৈশাখের ঐতিহ্য, বৈশাখের আবেদন একজন বাঙালীর জীবনে কতটুকু।

বৈশাখ বাঙালীর জীবনে এমনি এমনি আসেনি। এদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার চেষ্টা করেছে বৈশাখের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে, প্রচার করেছে "হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি" বলে। কিন্ত ইতিহাস বলে, যার হাত দিয়ে বৈশাখ কিংবা বাংলা নববর্ষের গোড়াপত্তন হয়েছে তিনি কেবল মুসলমানই ছিলেন না বরং সারা মুসলিম বিশ্বে একজন নামকরা, উদারপন্থি শাসক হিসেবে আজও পরিচিত। সেই জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবরের শাসনভার গ্রহনের আগে মুঘল আমলের পুরোটা সময় ধরেই কৃষিখাজনা আদায় হতো হিজরী সনের হিসাবে।

হিজরী সন আসলে চাঁদের হিসাব অনুযায়ী নির্ধারিত হয় কিন্ত উপমহাদেশের সারা বছরের কৃষিকাজ চাঁদের সাথে অতোটা সম্পর্কায়িত নয়, যে কারণে কৃষকেরা তখন খাজনা প্রদানে প্রতিকূলতার স্বীকার হতো। যথাসময়ে যথাযোগ্য খাজনা আদায়ের অভিপ্রায়ে তখন সম্রাট আকবর তাঁর সভার বিশিষ্ট গুণীজন ফাতেউল্লাহ্ সিরাজীকে দিয়ে হিজরী চন্দ্রাব্দ এবং বাংলা পঞ্জিকার সমণ্বয়ে "বাংলা বছর"-এর প্রচলন করেন, যা "ফসলী সন" নামে ১৫৮৪ এর মার্চ মাসে প্রবর্তিত হয়। আসলে ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের দিনটি থেকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বছরের সূত্রপাত হয়।

সম্রাট আকবরের আমল থেকেই বাংলা নতুন বছরাগমনের অর্থাৎ বৈশাখের প্রথম দিনটির উৎসবমূখর উদযাপন হয়ে আসছে। বছরের শেষদিন, চৈত্রসংক্রান্তির সূর্য পশ্চিমাকাশে ডুব দেবার আগেই পুরাতন অর্থবছরের সকল হিসাব চুকিয়ে ফেলার নিয়ম। বছরের প্রথম দিন মহাজন, ব্যবসায়ীরা তাদের ক্রেতা বন্ধুদের নিমন্ত্রন করে মিস্টিমুখ করানোর মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়ীক লেনদেনের পুনঃসূচনা করতেন "হালখাতা" বা হিসাবের নতুন খাতা খুলে। লুপ্তপ্রায় এই ধারাটা সোনা-ব্যবসায়ীরা আজও ধরে রেখেছে।

সম্রাট আকবরের আমলে সর্বভারতে খাজণা আদায়ের নতুন বছরের সূচনা হলেও, পুরনো দিনের সকল হিসাব পেছনে ফেলে আনন্দের নতুন বছরে পদার্পন বাঙালীদের মাঝে ঐতিহ্য হিসেবে টিকে গেছে। সবচাইতে বর্ণাঢ্য বৈশাখ উদযাপন হয় ঢকা শহরকে ঘিরে। বছরের প্রথম সূর্যের আলোকে বরণ করে নিতে দলে দলে লোক সমবেত হয় রমনার বটবৃক্ষের তলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, যা সারা বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে। সাদা পাজামার সাথে পাঞ্জবী পরিহিত ছেলেদের পাশে খোঁপায় বেলী ফুলের মালায় সজ্জ্বিত হয়ে, লাল পেড়ে সাদা শাড়ীর তরুণীরা মেতে ওঠে "ইলিশ-পান্তা" উৎসবে।

গ্রামাঞ্চল ও কোনদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই "পহেলা বৈশাখ" উদযাপনে। জায়গায় জায়গায় বসে মেলা হরেক রকম জিনিষের পসরা সাজিয়ে। বাড়ি বাড়ি বিলানো হয় ঘরে তৈরী মিস্টি, নতুন চালের পায়েস ইত্যাদি।

আর সবকিছু ছাপিয়ে এ প্রজন্মের একজন বাঙালীকে বৈশাখ যা শেখায় তা হলো সংগ্রাম করার সংকল্প। বাংলা সংস্কৃতির ওপর কালো থাবা বিস্তারে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার পূর্বপাকিস্তানে রবীন্দ্রসংগীতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে। পাকিস্তান সরকারের এই অন্যায় আচরণের জবাব দিতেই "ছায়ানট" ১৯৬৫ সালে রমনার বটমূলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "এসো হে বৈশাখ এসো এসো" গানটি দিয়ে সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে। বস্তুত এই দিনটি থেকেই "পহেলা বৈশাখ" বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম এক পরিচায়ক রূপ ধারণ করে। ১৯৭২ সালে 'পহেলা বৈশাখ' বাংলাদেশের জাতীয় পার্বন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার আগ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার ২১এ ফেব্রুয়ারীর মতোই থামিয়ে দিতে চেয়েছে বৈশাখের উদযাপন। সেই সূত্র ধরেই ২০০১ সালের বোমা-গ্রেনেড হামলা।

কিন্ত অজেয় বাঙালীর সামনে মাথা তুলে কোনদিনই দাঁড়াতে পারেনি কোন সাম্প্রদায়িক শক্তি। পহেলা বৈশাখের আবেদনও শেষ হয়ে যায়নি শত বাঁধার মুখেও। ঢাকা পেরিয়ে বৈশাখ আজ পালিত হয় জার্মানীর প্রাক্তন রাজধানী বনেও, পালিত হয় বিশ্বের প্রায় প্রতিটি শহরে যেখানে ন্যূনতম সংখ্যক বাঙালীও বিদ্যমান।

এইতো আমাদের বাঙালী ঐতিহ্য, এইতো আমাদের বৈশাখের ঐতিহ্য, শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে, সহস্র প্রতিকূলতা পেরিয়ে, রাস্ট্রীয় অস্থিতিশীলতার মাঝেও আমাদেরকে মাতিয়ে তোলে বর্ষবরণ উদযাপনে।

দেরীতে হলেও আমার ব্লগের পাঠকদের জন্য রইলো বাংলা নতুন বছরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।

************************

লেখাটি একই সাথে হাজারদুয়ারীতে প্রকাশিত।

Wednesday, April 18, 2007

ধীরে ধীরে!

ধীরে ধীরে সকালের সূর্য্য ঢলে পড়ে একসময় পশ্চিমাকাশে,
ধীরে ধীরে গোধূলী পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে একসময়,
ধুরুধুরু বুকে একসময় কাছে আসা প্রিয়ার চকচকে চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে ধীরে ধীরে,
ধীরে ধীরে সবাই 'ইনোসেন্স' এর দিকে রিটার্ণ করে
এবং-

সকল গুজবই সত্যি হয় একসময় ধীরে ধীরে...
ধীরে ধীরে...!

Sunday, April 01, 2007

স্কুলের টিফিনের টাকার জন্য...

স্কুলের বারান্দায় দাঁড়ানো শীর্ণ বসনের কোন এক কিশোর গভীর শূন্যদৃষ্টি মেলে দেয় আকাশের দিকে। বিড়বিড় করে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে কি যেন বলে। শক্ত চোয়াল, ক্ষিপ্র চাহনীতেই বুঝা যায় ঝগড়ায় মত্ত সে জগৎ-পিতার সাথে। হঠাৎ করেই ক্লাস রুমে ঢুকে ছোঁ মেরে বেঞ্চের ওপর থেকে বইগুলো তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

গ্রামের স্কুল, অত পাহাড়া কোথায়! টিফিন পীড়িয়ডে সবাই ব্যস্ত টিফিনে। ছেলেদের একটা জটলা ঘিরে আছে স্কুলের পাশের পুরির দোকানটিতে। দোকানটির সামনে দাঁড়িয়ে ছেলেটি কতোক্ষণ পুরি ভাজা দেখে।

বিকেল পর্যন্ত থাকা লাগে স্কুলে, কিছু একটা পেটে না পড়লে টিফিনের পরের ক্লাস গুলোর কিছুই যেন ঢুকেনা মাথায়। রাজ্যের ক্ষুধা নিয়ে ছেলেটি দিনের পর দিন স্কুলের ক্লাস গুলো করে যায়। পুরির দোকানী একের পর এক খোলা পুরি ভেজে সামনের নিউজপ্রিন্ট বিছানো বড় থালাটিতে রাখে। ছেলেটির সহপাঠীদেরই অনেকেই ভেতরে বসে তেঁতুলের চাঁটনী সহযোগে গরম গরম পুরি খেয়ে যাচ্ছে। সে কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে....।

দরিদ্্র বাবার কোন সামর্থ্য নেই ছেলের স্কুলের খরচ যুগিয়ে টিফিনের জন্য পয়সা দেয় আলাদা করে। ঠিক করে, সহপাঠীদের টিফিন খাওয়ার দৃশ্যে তাকিয়ে না থেকে নিজেই উপার্জন করবে নিজের টিফিনের খরচ। যোগার করে আরও দুইজন তার মতো বন্ধু। তিনজনে মিলে ঠিক করে কাছে কোথাও মজুরি খাটবে। যে টাকা পাবে তা তিনজন ভাগ করে নিবে। কিন্ত খবরদার! বাড়িতে জানানো যাবে না- তাহলে বাবা পিঠের চামরা আস্ত রাখবে না।

পরদিন সকালে তিনজন স্কুলের নাম করে বেরিয়ে যায় মজুরির খোঁজে। মিলেও যায়। গ্রামের এক গৃহস্থের ধানক্ষেতে নিড়ানি দেবার কাজ। চুক্তি 150 টাকা। সারাদিন তিনজনে হাড়ভাঙা খাঁটুনি দিয়ে উপড়ে ফেলে গৃহস্থের বেঁধে দেয়া বিরাট সীমানার ক্ষেতের আগাছা। সন্ধ্যায় গৃহস্থ 100 টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে বাকিটা কাল দিবে, হাটে।

তিন বন্ধু চলে আসে। পরদিন স্কুলে যায়। এবার তারাও টিফিন টাইমে পাশের দোকানের পুরি খেতে পারবে, গরমে চান্দি ফাটার সময় খেতে পারবে আইসক্রিমও। এক বন্ধু হঠাৎ মনে করিয়ে দেয়, গতকালের পাওনা 50 টাকার কথা। আগে টাকাটা নিয়ে তারপরেই নাহয় টিফিন করা যাবে একসাথে মজা করে। গৃহস্থের কাছে যায় তিনজনই। টাকা চায় শূন্যদৃষ্টি মেলে ধরা সেই ছেলেটি। কিন্ত একি...!

গৃহস্থ টাকা দেয়ার বদলে ছেলেটিকে জোরে জোরে কিল-চড়-ঘুষি মারতে থাকে অনবরত। দরিদ্্র বাবা মায়ের সেভেন পড়ুয়া সন্তান, সে কেন বয়স্ক , শক্ত পেশীর গৃহস্থের হাতের কঠোর মার সহ্য করতে পারবে! ঘটনাস্থলেই দমবন্ধ হয়ে মারা যায় ছেলেটি।

পুলিশ আসে, গৃহস্থ স্বীকার করে পাওনা 50 টাকার কথা, কিন্ত আঘাতের কথা নয়। বাকিদুজন কিশোর বন্ধু কাঁদতে কাঁদতে সাক্ষ্য দেয় ঘটনার। পুলিশ নিয়ে যায় ছেলেটির লাশ আর গৃহস্থকে। হয়তো লোকটির বিচার হবে, ফাঁসির রায় হবে বিচারে, কিন্ত -

দরিদ্্র মা-বাবা কি ফিরে পাবে তাদের নয়নের ধন ছেলেকে? যে ছেলেটিকে মাত্র 50 টা টাকার জন্য বেঘোরে প্রাণ দিতে হলো!
=========================

তথ্যসূত্র : দৈনিক প্রথম আলো
উৎসর্গ : রংপুরের জিকরুল হক, যে কেবল 14 বছর বয়সেই চেষ্টা করেছিলো নিজের পায়ে দাঁড়াতে, বাবা মায়ের বোঝা খানিকটা হালকা করতে।

মনটা খারাপ খবরটা পড়ার পর থেকেই

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ০৯

অবশেষে বিদেয় হয় বিষাদের হরিষ। ঝলমলে চাঁদ অবলোকনে আনমনো হাত অভ্যাস বশে তুলে আনে এসএমএসের যন্ত্র। পরক্ষণেই সপ্তদিবস আগের 'সস্তা' শব্দ, মেঘ এনে ঢেকে দেয় উৎফুল্লতা। কংকরের বাঁধানো গাছের গোড়ায় বসে খেয়াল হয়, বাতাসে বসন্তের ছোঁয়া। ধাক্কা লাগে এসে, বসন্ত এবং সস্তা অনুভূতির। স্মৃতি হাতড়ে ফিরে বন্ধুদের সঙ্গ, অজানা ভাবনায় আবেশি হয়ে ওঠে মন নামক ফালতু বস্তু। কেটে যায় প্রহর- টিকটিক- টিকটিক! কোকোনাটকিসের ননএ্যালকোহলিক ড্রিঙ্কস গলাধঃকরণ, বসে যাওয়া ফাঁটা বাঁশে পুটুর পটুর। নিদ্্রাদেবীর আদর অ-ভোগে বোয়াল মাছের চোখ ঢাকতে কালো চশমার আবির্ভাব। শরীরে রোদ লাগে, মনেও যায় মেখে! গেনারেল আনসাইগারের একটা গ্যাস বেলুন বাতাসের তোড়ে উড়ে যায় রাইনের দিকে, সূতায় বাঁধা একটা অপ্রিয় শব্দের ধারক নিয়ে- "বৃষ্টিনুপূর"