Friday, September 19, 2008

অপেক্ষা

ফুচুৎ করে লাইটার জ্বেলে অগ্নিতাহুতি করি সিগ্রেটের মুখে। এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি সেটা ঠিক কোন স্থান, কাল বা অবস্থান, বুঝে উঠতে পারি না। কীসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি সেটাও বোধের এ্যান্টেনায় ধরা পড়ে না। বাঁ হাতের কব্জি কানের মুখে নিয়ে টের পাই টিকটিক শব্দের সঞ্চালন। মহাকালের স্রোত। মনে পড়ে রুবী রায়, দুপুরের রোদে, বাস থেকে নেমেই একাকী কোনো কিশোর। কিংবা কফি হাউজের সেই সাতটা খালি চেয়ার কানের কাছে সযতনে ফিসফিস করে। ঠান্ডাটা জমে উঠছে। উঠুক না। গনগনে সূর্যটা জমে বরফের চাঁই হয়ে যাক। ধানের আস্ত তুঁষ সরিয়ে সেই বরফ কেটে ইফতারীর আগে কাগজি লেবু কচলে শরবত বানাতে চাইলে কেউ বানাক। পরনের লুঙ্গির গিঁঠ খুলে মেদালু ভুঁড়িতে সেটা পুনরায় জড়িয়ে নিতে নিতে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা আংশিক ছোলা ইত্যাদি জিভ দিয়ে খুঁচিয়ে বের করে 'থুঁ-তু' করে ফেলে দিয়ে নেমে আসুক সফদর আলীরা মসজিদের বারান্দা থেকে। ঢাকের ধমাধম শব্দে উলুধ্বনিতে কেঁপে উঠুক মা দূর্গার প্রতিমা। রবিবার বিকেলে ঢংঢং বেজে উঠুক সেন্ট্রাল চার্চের বিশাল ঘন্টা, গেয়ে উঠুক একদল সূক্ষ্ন তরুণ কণ্ঠ, "আমি প্রভুরও দাসী"। গাছের পাতা সব ঝরে যাক, সাদা চাদরে মুড়ে যাক চারদিক। শুরু হোক রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে-অন্তরীক্ষে লাল আলখাল্লা-ঝুটি টুপি আর শুভ্র শশ্রুর আনাগোণা। অথবা স্থানীয় তাঁতের পাতলা চাদরে মোড়া কারও দৃষ্টি আকর্ষনী চেষ্টা, "বা-জান, দুইটা টেকা সাহাইয্য দিবেন!"
নিশ্চুপ, ঠাঁয় দাঁড়ানো আমি। নিস্তব্ধ চারিদিক, এইবেলা। অপেক্ষায় আছি, বা রেখেছি, নিজেকেই...

No comments: