গুরুচন্ডালী - ০১২
গরম জিলাপীঃ
আজকে ভোরে ঘুম ভেঙে গেলো হঠাৎ। উঠে বসলাম। মাথা একবার ডানে আবার বামে ঘুরিয়ে দেখছি ভ্যাবলাকান্তের মতো। সব কেমন পরিবর্তিত লাগছিলো, আক্ষরিকই। কালকে রাতে ঘুমাতে যাবার আগে যেমনটা দেখে গিয়েছিলাম তেমন নেই। মনে খটকা লাগলো! বাইরে বেরুলাম। সিঁড়িতে দেখলাম কালো আলখাল্লা পরিহিত এক বুড়ি বসে কাঠবাদাম না কী জানি খাচ্ছে। দেখতে অনেকটা 'উইচ'এর মতো। আমাকে দেখে বাদামের ঠোঙা সরিয়ে বসতে বললো। কিছু একটা বলতে চায় আমাকে। আমি বসি নাই। একটা টেনশন হচ্ছিলো। বুঝতে পারছিলাম, আমি ভবিষ্যতের কোনো একটা সময়ে চলে এসেছি। আমাকে 'বর্তমানে' ফেরত যেতে হবে, সেটা কী করে আমি বুঝতে পারছিলাম না। বুড়ি বলল, "আবার ঘুমিয়ে যাও...!" থ্রীলিং একটা সময়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভয়ের চোটে বিছানায় শুয়ে পড়লাম গিয়ে আবার। একটু পর একটা বিশাল হেঁচকি দিয়ে উঠে বসে দেখি আবার সব ঠিক, আগের মতো। বাইরে তাকিয়ে দেখলাম, নাহ, বুড়িটা নেই।
বিছানায় বসেই হিসাব মিলিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম ইদানিং খুব বেশি পরিমানে 'হিরোস' আর 'লস্ট' দেখা হয়ে যাচ্ছে! এই ভবিষ্যত ভ্রমনের ঘটনাটা তারই প্রতিফল। কিন্তু আবার হিসাবে প্যাচ লাগে এটা ভেবে যে আমার একসময় অনেক দেজা-ভু হতো। তখনতো হিরোস বা লস্টের চল ছিলো না। বস্তুতঃ এগুলা জানতাম ও না। সেই প্রাইমারী স্কুলের দিনগুলোতে কিছু কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে মনে হতো এখানে আমি আগেও একবার ছিলাম। এখন এটা-এটা হবে, হতোও তাই। আমি আশ্চর্য হতাম, কোনো ব্যাখ্যা জানতাম না!
ছোটবেলায় যে দুটো স্বপ্ন বেশি দেখতাম তা হলো বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তীর্ণ ছাদ, ফোস্কার মতো ফোলা ফোলা অংশ তার। তার উপর দিয়ে আমি উড়ে যাচ্ছি। পাখা-টাখা ছাড়াই আমি ভেসে বেড়াচ্ছি। এই স্বপ্নটা এখনো দেখি, কিন্তু অত ফ্রিকোয়েন্ট না।
দ্বিতীয় স্বপ্নটা ছিলো পানির নিচের। আমি পানির নিচে দিব্যি নিঃশ্বাস নিতে পারছি। চলতে পারছি, কিন্তু ডাঙ্গার মতো না। অনেকটা লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে হতো, কিংবা পা টেনে টেনে। একবার ঘুরতে ঘুরতে একটা দালানের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলাম। পানির নিচের দালান। সেই প্রথম এবং শেষ, পানির নিচে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন আরও দেখলেও দালানটা আর দেখিনি।
স্বপ্ন দুটো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা যেতে পারে কখনো। পঁচিশ-ত্রিশ তলা দালানের ছাদ থেকে আনুভূমিক লম্ফ দিয়ে দেখা যেতে পারে ভেসে থাকতে কেমন লাগে। কিংবা ভূ-মধ্যসাগরের তীর থেকে হাঁটতে হাঁটতে গভীরে চলে গিয়ে দেখা যেতে পারে নিঃশ্বাসে কোনো ব্যাঘাত ঘটে কীনা। আর সেই দালানটা, সেটারও দেখা পাওয়া যায় কীনা!
বাসী সিঙ্গারাঃ
এখানে আমার বোকাসোকা, আলাভোলা টাইপের কিছু স্বপ্নের কথা (থাকে না! ঐ যে "তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও, কী করতে চাও" টাইপের!) বলার কথা ছিলো। কিন্তু বলবো না।
পান্তাভাতঃ
এখানে কিছু একটা লেখার কথা ছিলো। কিন্তু ভুলে গেছি। সহসা মনে পড়ারও কোনো লক্ষণ দেখছি না।
3 comments:
আমার স্বপ্ন ছিল আরো অনেক অদ্ভূত! আমি দেখতাম আমি আমার সমবয়েসি একটা ছেলে, যাকে আমার স্বপ্নে ছোট ভাই মনে হত, তার সাথে দাদুবাড়ি-নানুবাড়ি ঘুরছি! তাও একবার দেখতাম দাদুবাড়ির রান্নাঘরের পেছনের দরজাটা দিয়ে বের হয়ে নানুবাড়ির সিঁড়িকোঠায় এসে পৌঁছে গেছি!!!
নস্টালজিয়াতে আক্রান্ত ।
Tenders And Consulting Opportunities in
Bangladesh
অসাধারন, খুব ভালো লাগলো। অনেক দিন পর এমন কিছু পড়ার সুযোগ হল। আশা করি এমন অনেক লেখা আমরা পাবো আপনার কাছ থেকে।
Post a comment