Friday, May 04, 2007

ললনা গল্পের খসড়া-

সময়টা বড়ই দুর্গম, তবে দুর্বার কিনা জানি না- বারবার টেরাই মাইরাও কিছু বাইর হইতাছে না। হাল ছাড়ি নাই এখনো, "খাড়াও তুমি জরিনা, আমি তোমারে ছাড়ুম না। লেইখাই ছাড়ুম তোমারে নিয়া কাহিনী, ভয় নাই লাগেও যদি পিছে তোমার প্রেমিক বাহিনী"!

কইতাছিলাম আইফেলের সেই ললনাদুর্ঘটের কথা।

আমি হা কইরা হাঁপাই আর টেরাইয়া টেরাইয়া চাইয়া একটা মুচকি হাসি দেই ছুড়ির দিকে। হঠাত দেখি সে কেমন পরিচিত ভাষায় কথা বইলা উঠলো। আমি চোখ ডলি, ভুল শুনি নাকি ঘরে ঘুমাইয়া খোয়াব দেখি, বুঝতাছি না।

আহা কতদিন পরে পরিচিত ভাষায় কথা শুনলাম। আঙুলের কর গোণা ধরলাম, কইদিন হইলো সেই হিসাব বাইর করতে। শয়তান ছেমরী দিলো আমার হিসাবের তেরোটা বাজাইয়া- "এই ট্রেইন খাড়ায়া রইছে ক্যালা, সিঙ্গেল ট্র্যাক নাকি!"?

ইচ্ছা করতাছিলো চিক্কুর মাইরা কই, "নজমুল হুদা কি ত্রিভুজের কিছু লাগে? আমি ক্যামনে কমু ট্রেইনের লাইন কয়ডা"!
কিছু কইলাম না, দাঁত বাইর কইরা হাঁসি দিয়া কইলাম, এনাউন্সে তো কইলো উল্টা দিকের রেল গাড়ি আইতে দেরী হইবো, চুপ কইরা বইয়া থাকো, কথা কইয়ো না...। ফুড ফর ওয়ার্ক- কথা কম কাজ বেশী!

বেটিগা থ' খাইয়া। কয় কি হালায়! আমন্ত্রন জানাইলো পাশের সিটে বসার। ভাইবা দেখলাম মন্দ না, এক ঘন্টার ভ্রমনটা খারাপ হয় না তাইলে!

বইসা গেলাম পাশের সিটে। তার চিবানী মার্কা কথা শুইনাই বুঝলাম পাশের দেশ হল্যাণ্ডের পাবলিক। ভাইয়ের এখানে বেড়াইতে আসে মাঝ সাঝে। স্কেটিং খুব পছন্দের একটা স্পোর্ট, আর ক'দিন পর বরফ ভালো করে জমলে অস্ট্রিয়া যাবে ভাই-ভাবীর সাথে।

মেয়েটার মাথা পরিষ্কার, কথা বলে দারুণ, আমার মতো ভোম্বল টাইপের না। জমে গেলাম কথায় কথায়। এই কথা সেই কথা নানান কথা এলোপাথারী কথায়! কেটে গেলো ঘন্টা, কোলনে পৌঁছে গেলাম সময় মতোই। ঘড়ি দেখে বললো, হাতে এখনো ৩৫ মিনিট সময় আছে, আমার তাড়া না থাকলে যেন ওকে একটু সময় দিই। দিমু না, হইবো না, যা বেটি ভাগ, খাইয়া আর কাম নাই! নিজের সাথে এই টাইপের যুদ্ধ করেও নিজেকে মানাতে বাধ্য হলাম। স্টেশনের নিচেই একটা দারুণ ক্যাফেতে বসলাম সময় কাটানোর নিমিত্তে!

আমার কথার সাধারণত কোন লাইন বাইন থাকে না। সেই জন্যই বলতে পারছি না এক্সাক্টলী কি কথা হইছিলো সেদিন, তবে মনে আছে পশ্চিমে এই প্রথম কোন সুদর্শনা ললনার সাথে একলা বইসা কফির গেলাসে চুমুক মারতাছি।

৫ মিনিটের মধ্যেই ৩৫ মিনিট শেষ হইয়া গেলোগা (হালার ঘড়ি)। এক নাম্বার প্ল্যাটফর্মে গিয়া তারে আইসিই ট্রেইনে তুইলা দেবার আগেই নিজের ফোন নাম্বারটা দিয়া কইলো যেন যোগাযোগ করি। দরজা বন্ধ হওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে আইসা আমারে জড়াইয়া ধইরা কইলো, "আমি আবার আইতাছি..."!

আমি কিছু বুইঝা, কিছু কইতে গিয়া দেখি, ও ততক্ষণে ট্রেইনের ভিতরে, দরজা ট্যাঁওট্যাঁও শব্দ কইরা বন্ধ হইয়া যাইতাছে!

No comments: