Wednesday, March 22, 2006

... ... ...তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে

আশ্চর্য লাগে কখনো কখনো যখন এরকম বয়সী কাউকে দেখি সম্পুর্ণ একা। স্বামী হয়তো অনেক আগেই বিগত, ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। যেকোনো কারণেই হোক তারা বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকেন না, সবকিছু তাদের একাই করতে হয়, কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঘরের টুকুটাকি সব কাজ...। কষ্ট লাগে, তাদের দেখলে, ভাবতে গেলে তাদের একাকিত্ব জীবন।

কয়েকদিন আগে মার্গারেট নামে এক বৃদ্ধার সাথে কথা হচ্ছিল। আমার প্রাথমিক ধারণা মতে সে ছিলো এক বদমেজাজী, বিদঘুটে, পানলিïসু মহিলা। কিন্ত যখন কথা হলো, বুঝলাম তার একমাত্র ছেলে যে একটা জার্মান টিভি চ্যানেলের টেকনিক্যাল অপারেটর, আর একমাত্র মেয়ে যে কিনা হল্যান্ডে পড়াশুনা করতে গিয়ে লা-পাত্তা।

মার্গারেটের অভিযোগ, তার মেয়ে ভুল মানুষের সাথে প্রেমে পড়েছে যে কিনা তাকে ব্যবহার করছে কেবল। মার্গারেট নিজে তাকে ফোন করে, মেয়ে কখনোই না।আমি এক পর্যায়ে বল্লাম, তুমি পান করো কেনো? ওর একটা হাত ধরলাম.... মার্গারেট নিজেকে সামাল দিতে পারলোনা আর। কেঁদে ফেললো, বললো, তুমি জানোনা আমি কতো একা, আর এই একাকীত্ব থেকে, একাকীত্বের যন্ত্রনা থেকে বাচার জন্য আমি পান করি..... আমার আর কোন উপায় নেই যে।

আমি কিছু বলতে যেয়েও আর কথা বাড়াতে পারিনি। অবাক হয়ে শুরু তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরা দেখেছি.... ওর বয়সের ভারে কঁুচকে যাওয়া চামড়ার হাত দুটু আমার হাতে শক্ত করে ধরে, অসহায় বোধ করেছি, ছটফট করেছি ওর জন্যে কিছু না করতে পারার মানসিক অস্বস্থিতে.....।

তবুও সময় কেটে যায়, তবুও জীবন বয়ে চলে..... তার নিজস্ব নিয়মে....। যেমনটা বয়ে যাচ্ছে মার্গারেটের..... যেমনটা আমাদের....। মার্গারেটের একাকীত্ব যেনো আমাকেও বুঝিয়ে দিতে চাইলো, “সব কিছুর মাঝে আমিও কতো একা, কতো নিঃসঙ্গ এই আমি.....“।

No comments: