Friday, July 27, 2007

ব্রেকফাস্ট এট টিফানী

বছর পাঁচেক আগে রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে শুয়ে ব্রেকফাস্ট এট টিফানী গানটা শুনতে শুনতে ভিজ্যুয়ালাইজ করেছিলাম এইভাবে যে কোন এক উইকএন্ডের সকাল বেলা মনে হলো ব্রেকফাস্ট করবো শহরের যান্ত্রিকতা ছাড়িয়ে কোন গাঁয়ের পথের ধারের অচেনা কোন এক জায়গায়, কোন এক বৃদ্ধার কাঠের মেঝে এবং বেড়ার লাল ধূলোউড়া কোন রেস্টুরেন্টে।জায়গাটা ডেফিনিটলী হবে অস্ট্রেলিয়ার সিবিডি এরিয়া ছাড়িয়ে, হাইওয়ে ধরে অনেকদূর। পথে যেতে যেতেই লাল সূর্যের দেখা মিলবে!

পাশে পড়ার টেবিলে বইয়ে মুখ গুঁজে থাকা ছোট ভাই তখন বললো, আমারেও নিয়ো সাথে। আমি বললাম তুই কি মদ খাস? বলে, না। আমি তখন বলি, তাইলে তুই গিয়া কি করবি? আমি তো ওয়ার্লডের ফাইনেস্ট ওয়াইনে চুমুক দিমু তখন!ছোট ভাই বলে, তা দিও, আমি নাহয় এক কাপ কফি নিয়াই বসুম নে। তাও এরম একটা সুন্দর জায়গায় আমারে নিয়া যাইও...।

ও যখন অনেক ছোট ছিলো। মানে একেবারে গেদাবাবু। তখন একদিন আমার সাথে হাঁটতে হাঁটতে জংলা মতো একটা জায়গায় আমি একটু জোরে পা চালাতেই পেছন থেকে ডেকে বলে, "মাজি বাই, তুমি আমারে আফ্রিকার জংকলে একলা ফালাইয়া যাবা গা"?

ওর কথা বলার একটা ঢং আছে সেই বাবুবেলা থেকেই। বলতে বলতে ভুলে যাওয়া কি বলছিলো। আমি বেশ মজা পেতাম ওর এরকম একটা নেগেটিভ কোয়ালিটিতে। থেমে থেমে কথা বলে, মনে হয় একটা শব্দ বলে পরেরটা খুঁজে বের করে তারপর মুখ দিয়ে বের করে।

প্রথম যখন আমাকে এয়ারপোর্টে বিদায় দেয় তখন আমার কোমর সমান ছিলো। সবার সাথে বিডায় নেবার সময় দেখি কে যেনো আমার শার্ট ধরে নিচের দিকে টানে। তাকিয়ে দেখি ও। আমি টাকাতেই শার্টের কোণা ছেড়ে দিয়ে হাতের উল্টাপিঠ দিয়ে চোখ মুছে। কাছে ডাকি আসে না।দেশে ফিরে দেখি বিশাল বড় ব্যাটা হয়ে গেছে, আমার কাঁধ সমান। এসএসসি পরীক্ষা দিবে।

আমার যখন চলে আসলাম, এবার বিদায়ের সময় জড়িয়ে ধরে বিদায় দিলো। তিন ভাই জরাজড়ি করলাম একসাথে। এরই মাঝে কেটে গেলো কয়েকটা বছর। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমার সেই থেমে থেমে কথা বলা গ্যাদা ভাইটাও বড় হয়ে গেলো। ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষে উঠে গেলো। কথা ছিলো অনেক আগেই অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে শুরু করার।

আজকে সেই দিন। অনেক গুলো দিনের গণণা শেষে আর আধা ঘন্টা পরে এমিরেটস এর ফ্লাইট থেকে বের হবে এক তরুণ, আমার ছোট ভাই। সেই গুটি গুটি পায়ে হাফপ্যান্ট পরে দৌঁড়ানো আমার বাবু-ছোট ভাইটি না, দেখা মিলবে গোঁফ-দাঁড়ি কামানো এক তরুণের।

বিষণ্ণতার পুজারী

ঘুম ভাঙলে ধূমায়িত কফির মতো মনখারাপ প্যাঁচিয়ে ওপরে উঠতে থাকে।দেড়দিন ধরে ফোন বন্ধ, সবকিছু থেকে দূরে থাকতে চেয়েও হচ্ছে কি! চারদিকে একটা বিষণ্ণতার ছোঁয়া, নিজের ভেতরে বিষণ্ণতার মেলা। ব্যস্ততার গহীন অরণ্যে পথহারা হঠাৎ রিলিফ কিছু নেই আর। সব কিছুই কেমন বিষণ্ণতায় ভরা...

Monday, July 23, 2007

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ১১

বেথোফেনের মূর্তির সামনে বহুদিন পরের ক্ষণ নিয়ে যায় বহুদিন পূর্বের ক্ষণে। সেদিন ছিলো বিশাল গোলাকায় চাঁদ। রূপালী আলোয় উদ্ভাসিত চত্বর। কিঞ্চিত দোলানো পায়ে ছিলো নেশার অন্যরকম সিম্ফনী। স্মৃতি মোটেও বিঘ্ন ঘটায় না। গোল্ডেন জন্মদিনের কথা মনে পড়ে। 'সর্বশেষ উইশার' ভিন্য দোতনা তুলে নেচে যায়। ডানে বামে তাকিয়ে কয়েকজনের অলস এগিয়ে যাওয়া। ভূতুরে আলো। জুপ পারফিউমের ভুভু ঘ্রাণ। দিনের ফ্ল্যাশব্যাকে ওয়াশ স্যালুনে হঠাত বেজে ওঠা মোবাইলের এলার্ট। বন্ধ করে দিয়ে ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। মার্লবরো লাইটের প্যাকেট খুলে যায়, ধপ করে জ্বলে ওঠে ফয়ারসুগ। নি:শব্দে পুড়তে থাকে আরো একটা ক্যান্সারের খনি!