Saturday, January 27, 2007

দুধভাত খাই, জলপাইয়ের গুনগান গাই

এই চোপ শালা, এক্কেরে কথা কবি না কইলাম। কইলেই ভুড়ি গালাইয়া দিমু।

জো কথা বোল গ্যায়া, সামঝো খালাস হোগেয়া। মেরে আঙনেমে তুমহারা ক্যায়া কাম হ্যায়, নিজের পেছনে কে রে নিজে নিজে বাঁশ দ্যায়?

কে কে পপ সাম্রাট আজম খানের চুপ, চুপ, চুপ - অনামিকা চুপ গানটা শুনতাছেন হাত উঠান।.... হ্যান্ডস আপ!!

আরে ধুরঃ মিয়া, এমনে উঠাইছেন ক্যা? আমি কি বন্দুক তাঁক করছি? অহ, বুঝছি, বোম্বার ডর! আরে মিয়া এইটা তো বোম্বা না। এইটা তো জলপাই! এইটা খায়, আবার মাঝে মইধ্যে মাথায় ও দ্যায় তৈল বানাইয়া। হাত নামান কইতাছি।

আরেহ, আবার কী হইলো? অমোন বাংলা 'দ-এর মতো বেঁকা হইয়া রইলেন ক্যা? সোজা হোন মিয়া। আপনেগোরে নিয়া আর পারি না। এত্ত আন-ইস্মার্ট আপনেরা। আমার জলপাই রঙের স্যুট দেইখ্যা ডরে কুতকুত করতাছেন। বঙ্গবাজার থনে কিনছি, সেকেন্ড হ্যান্ড। কেমুন হইছে মালডা কন দেহি!

মর জ্বালা, তোঁতলান ক্যালা আবার? আমি কি আপনেরে কিছু কইছি? আরে কালা রঙ দেখলেই কি ক্রস ফায়ার ভাবতে হইবো? কালাগো অহন বেইল নাই। মাথায় সস্তা নাইরক্যাল তৈল দেওনের দিন ভুইল্যা যান। হেইদিন বোয়াল মাছে খাইয়া ফেলছে। অখন থাইক্যা দামী অলিভয়েল দিবেন মাথায়।

কি!!! কোন হালায় কয় চুল উইঠ্যা যায়, দিমুনি ঠুশ কইরা?

আরেহ না, আপনে ডরাণ ক্যা, আপনেরে কিছু কইছি?

সয়াবিন তেলে পুঁটি মাছের ভাজি খাওন ভুইল্যা যান। অলিভয়েলে ভাইজ্যা খাইয়া দেখেন কীরম টেস্ট! ইয়াম্মী.....

আর হুনেন, এইসব এন্টারনেট ফেন্টারনেট থোন গাট্টি বাইন্ধা ফালাইয়া। পত্রিক পড়ার দরকার কি? পত্রিকার কাগজ বানাইতে ট্যাহা লাগে না? এত্তো খবর দেইখা কি দেশোদ্ধার করবেন নি? ভীতিবি আছে না, ঐটাতে খবর দেখবেন গররিব দেশের মানুষ, এতো শখ ক্যা?

দ্যাশে অহন উন্নয়ন আনতে হইবো, ট্যাহা জমাইতে হইবো, এন্টারনেটে বালগিং কইরা, পত্রিকায় আবঝাব লেহা দিয়া, বিভিন্ন চ্যানেলের বাগানা নারীগো পড়া খবর দেইখা উন্নয়নের বারোটা বাজানি ঠিক না। এইটা হইতে দেওয়াও ঠিক না।

তয় গান হুনেন ঠিকাছে। কোনডা হুনবেন এইডা তো কইলাম ই।

চুপ, চুপ, চুপ - বাংলার মানুষ চুপ! এইডা হুনলে আপভি ভালা, হাম ভি ভালা, দ্যাশ ভি ভালা, বড় মামা ভি ভালা, ছোড মামাভি!

এর অন্যথা হইলেই বয়াম ভরা জলপাইর আচার, বুইঝেন কইলাম!!

আর বেশি ক্যারাঞ্চি করলে... ডাইরেক্ট দেশদ্রোহী এবং ফাঁসির কাষ্ঠ- কথাডা মনে থাকে জানি। ঐ কে আছো ওরে নিয়া যাও।

নে-ক্স-ট....

Friday, January 26, 2007

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ০৭

সন্ধ্যার আগমনে ক্ষিপ্ত মেজাজ বিক্ষিপ্ত করে ছড়িয়ে দেয় সমস্ত ভাবনা। পটাপট খুলে যেতে থাকে খিলহীন দরোজার কপাট। পথে যেতে যেতে এর ওর 'মাদাররে-ফাদার' গালি দিয়ে চৌদ্দতম বংশধরের উদ্ধার করা হয় সারা। ঘরে ফিরে ওভাবেই বালিশে এলিয়ে দেয়া মাথায় নামে স্বপ্নের ভীর। বেরসিক মোবাইল সুর বাজিয়ে যায় সমান তালে বিনা ছন্দপতনে। খুঁজে পাওয়া যায় পুরাণা পলটনের সেই গলি। পরমুহুর্তেই বদল দৃশ্যপট। ঘাড় ঘুরাণো এক চপলা, মেঘকালো কেশরাজীর ফাঁকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে...। অপ্রস্তুত মনেহয়, কায়মনোবাক্যে দৃশ্যপট বদলে যাবার প্রার্থণা। ঠিক তখনই কানে আসে 'বীপ' শব্দটা - "কি মিয়া ঘুমাও নাকি..."। সামলে নিতে সময় লাগে, অবাস্তবে আশ্বস্ত হওয়া হয়। ঘোরের মধ্যেই শোনা যায়, "... নট ইন কাভারেজ"...!

Wednesday, January 24, 2007

নাগরিক হালচাল : অরণ্যের আহবান

নগরে নগরে ঘুরেও নিজের মধ্যে নগরায়ণ ঘটাতে ব্যর্থ আমি। আমাকে পল্লী বাংলার পলি মাটির মায়াবী আদরে সিক্ত পললের বুক চিড়ে উঠে আসা মাঠভর্তি সবুজ ধানের চারা এখনো হাতছানি দেয়। বাতাস যেনো কানে কানে ফিসফিস করে বলে যায়, 'ছুঁড়ে ফেল এই কৃত্রিম সভ্যতা, আমি তোকে তোর অরণ্য ফিরিয়ে দেবো'। এক মাঠ ভরা সর্ষে ক্ষেত, হলুদ ফুলের সমাহার, কাঁধে পাকা ধানের ঝাঁপি বয়ে নিয়ে যাওয়া চুক্তি ভিত্তিক কৃষি-শ্রমিক, মেঠো পথে হৈ হৈ করে দৌড়ে যাওয়া একদল উচ্ছবল কিশোরের উল্লাস, গাঁয়ের ঠিক ঢোকার পথে মোড়ের দোকানটার বাঁশের বেঞ্চিতে পা তুলে বসে ধোঁয়া ওঠা চায়ে তৃপ্তির চুমুক - সবই ফিরে পেতে ইচ্ছে জাগে, সব...।

ইচ্ছে জাগে, কনকনে শীতের সকালে আরিচা ঘাট থেকে পেট ভরে খেজুর রস খেয়ে কাঁপতে কাঁপতে বাসে ঢুকে গায়ে চাদরটা জড়িয়ে খানিক ঘুমিয়ে নিতে। ইচ্ছে জাগে ওয়ার্ণার ব্রাদার্স থেকে কেনা 'লুনী টুনস' এর ছবি আঁকা সাদা টি-শার্ট টা গায়ে চাপিয়ে বেরিয়ে পড়ি কোন এক গোধূলি বেলায়। আলতা পায়ে, এক প্যাঁচের তাঁতের শাড়ি পড়া কোন তরুণীর ফিতা বাঁধা বেণী দুলিয়ে দুলিয়ে চলে যাওয়া দেখি চোখ ভরে। ইচ্ছে জাগে সন্ধ্যার ক্ষণে পুকুর পাড়টায় বসি, সেই কৃষäচূড়া গাছটার নিচে। সকালে উঠে রাস্তার ধারের দূর্বায় জমে থাকা শিশির কণার স্পর্শে ঠান্ডায় 'ফেটে যাওয়া' ভাব নিয়ে উদ্দেশ্যহীন পথচলা কতদিন হয় না।

নাগরিক জীবন, নগরে বসবাস, নিজেকে উত্তরাধুনিক রূপে উপস্খাপন করার প্রয়াস - সব মেকি হয়ে যায় একটা সময়। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে, মজ্জা কাঁপানো শীতে গৃহ-উত্তাপক যন্ত্রের প্রভাবে উষä ঘরে ফিরতে মন সায় দেয় না। থেকে থেকে মন এই নাগরিক সভ্যতা ছেড়ে কেবলই চায় চলে যেতে সেই অরণ্যে, যেখানে প্রজাপতির ডানায় ভর করে আসে পলাতক জোছনার বন্যা। সেই জোছনায় হারিয়ে যেতে চায় মন। পাথরের স্কয়ারে বসে বাজানো বেথোফেনের সপ্তম সিম্ফনীর চাইতে মহুয়ার গন্ধে মাতাল করা আকাশের নিচে আলতা রঙের পদ্ম ফুলের পুকুরের ধারে বসে সাঁওতাল রাতের হাওয়ায় ভাসানো কোন বাশী বাদকের সুর শুনতে বড়ই ইচ্ছে জাগে আমার।

Saturday, January 20, 2007

বিশেষ প্রতিবেদন : আমি তাকে কাছ থেকে দেখেছি

শেষ পর্যন্ত আমি তারে কাছ থেকে দেখেছি। তার স্পর্শ না পেলেও তার গায়ের গন্ধ আমার নাকে লেগেছে। আমাকে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে গেছে সে সন্তর্পণে। আমাকে সে যারপরনাই করেছে শিহরিত, আহ্লাদিত, চমকিত, পুলকিত, বঞ্চিত!

সবাই যেখানে তাকে নিয়ে মাতামাতি করছে, তখন আমার ভাগ্যে সে চলে এলো অপ্রত্যাশিত ভাবেই। আমি বাজি ধরেই বলতে পারি, আমি উহাকে যেরূপে পাইয়াছিলাম, সেইরূপে অন্য কেহই তাহাকে উপলব্ধি করিতে পারে নাই। ভাবছিলাম তার উষä পরশের ছুঁয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটুকু নিজের মধ্যেই রেখে দিবো, দেবো না কভু তারে অন্যের তরে বহিতে - কিন্ত বাঁধ সাধলো যে এখানে...!

সকালে খালাতো ভাইয়ের ফোন পাই। এই খবর সেই খবরের মাঝেও সে খবরটা ঠিকই দিয়ে দেয়, “আজ তো সে আসছে তোর ওখানে“। ভাব করি যেনো কিছুই হয়নি, কিন্ত ভেতরে একটা উত্তেজনা কাজ করতে থাকে চেপে থেকে। একটা সময় চিপায় পড়ে ভুলেও যাই তার কথা, তার আসার কথা, তার চলার কথা। তার সাথে “হতে পারে দেখা“ টাইপের সম্ভাবিলিটির কথাও।

দৌড়ে ইশটিশানের সাদা রঙের রেলগাড়িটাতে চড়ে বসি। যাচ্ছি আর ভাবছি- বয়ে যাওয়া সময়ের কথা, ঢুলু ঢুলু চোখে কাটানো নির্ঘুম রাতের কথা, জানালার কাঁচে বৃষ্টির ঝটকা...। হঠাৎ মনে হলো সে আসছে, তার নুপূরের সুর যেনো কানে ভেসে এলো আমার। তার চুড়ির শব্দ আমার কানে রিমঝিম রিমঝিম ঝঙ্কার তুলে যাচ্ছে যেনো।

নিজের মাথায় আলতো করে টোকা দিয়ে সম্বিত ফিরে পাই, ধুর, কী ভাবি এইসব? দুইরাত না ঘুম আর আসতে চাওয়া জ্বরের আগমনী বার্তায় গিঁঠে গিঁঠে ব্যাথাকে বাহবা দেই এই ভাবালুতার জন্য। কিন্ত তারপরেও সে আসছে, অন্য সবাই বুঝতে পারছে কিনা কে জানে, আমি পারছি...।

হঠাৎ এ্যানাউন্সমেন্ট, “... ভিয়ার বিটেন ইয়ার এন্টশুলডিগুং“। বসে রইলাম ঠাঁয়। একটু পর আবার চলতে শুরু করলো ঝাঁকি দিয়ে, কিন্ত সে আসছে, এখনো আসছে, শুধু বুঝতে পারছি না কোন দিক থেকে - সামনে থেকে, পেছন থেকে, ডাইনে নাকি বায় থেকে?

হঠাৎ কোন এক অজানা জায়গায় নামিয়ে দিলো আমাদের। ওমা, জীবনেও কাস্ট্রপ রাক্সাওয়ের নাম শুনিনি। এ ক্যামন জায়গা রে বাবা? মুখে কুলুপ আঁটা আমি অন্য সবার সাথে নেমে আসি। একবার মনেহয় এই ভর সন্ধ্যে বেলাম ডাকাতি হবে নাতো আবার? ছি: ছি: জার্মান, তোমরা এতো খারাপ? এক বাঙালরে একলা পাইয়া ডেকাতি করবা? পারলে দলবল সহ ধইরো! কিন্ত ঘটনা হলো আমি তো একলা না, সাথে আরো প্রায় মোর দ্যান আধা শতক কর্ম ফেরত পাবলিক।

কাস্ট্রপ রাক্সাওয়ের বাইরের স্কয়ারে এসে দাড়াই...। মনে মনে একটা বিড়ি ফুঁকার প্রয়োজনিয়তা অনুভব করছি, এমনই সময়... হ্যা ঠিক এমনই সময় ঘটলো তার সাথে আমার প্রবল সাক্ষাত, একটা জোড় ধাক্কা!

আরেকটু হলেই পড়ে যেতাম, কোন রকমে সামনে নিয়ে উলটা দিকে দৌড়। যতোক্ষণ না নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছেছি ততোক্ষণ আর পিছন ফিরে তাকাইনি। এরই মধ্যে উদগ্রীব ভাই আর কয়েকজনের মুঠো ফোনে পালস আসা শুরু করেছে। সারা দেশে তার আগমনের কারণে ট্রেইন চলাচল বন্ধ!

হ্যাঁ ভাইসব আমি “তার“ কথাই বলছি। কালকে সন্ধ্যায় তান্ডব চালানো সেই টর্নেডোটি। যার আঘাতে কিনা কেবল জার্মানীতেই মারা গেছে ১১ জন। ধংস হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্খাপনা।.... .... ...।

আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। শইলডা ভালা না। দূব্বল পাইতাছি না...

Wednesday, January 17, 2007

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ০৬

ক্লান্ত চোখের পিটপিটানিতে ধরা পড়ে রিঙলেস মুঠোফোনের আলোর খেলা। ওপাশের সম্বোধনকে সাথে করে কনকনে রাত 20... 40... 60... সেকেন্ড ধরে হারিয়ে যায় সময়ের গহীন উপত্যকায়। বদ্ধ চোখে ভাবনার সাগরে ডুব দেয়া চেতনা বাস্তবে ফিরে আসে 'কুষ্ঠ' রোগের প্রত্যাশায়। কোন এক অবসেশনে আবারো সর্বোনাশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে চেতনারা ঘটঘট কড়া নাড়ে। ঘুমের অজুহাতে দৃশ্যপট ছাড়লেও আবেশী মন থাকে অবশ হয়ে! কেটে যায় সময়, প্রহর, মুহুর্ত ঘন্টার এককে। এ্যাক্সেসে গন্ডগোল বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, সম্ভবতঃ রিপুর তাড়নায় ঘটাশ শব্দে ছেদ পড়ে। যান্ত্রিক গোলযোগকে দায়ী করে ক্লান্ত বাহু তার কাজ করে চলে স্বয়ংক্রীয়। যদি বুঝা যেতো গোলযোগ হয় ইচ্ছাকৃত, হয়তো পাথরের ওজনটা আরেকটু বাড়তো না!

Tuesday, January 02, 2007

লেখার এলোমেলো ড্রাফট ০৫

সময়ের স্রোতে উড়া চলা কোয়ান্টাসের ডানায় ভর করে কিংসফোর্ড স্মিথের বহির্মুখে পরিচিত সেই মুখ, বন্ধু কী খবর বল? কতোদিন দেখি নি!! চারচাকার পঙ্খীরাজ প্রিন্সেস হাইওয়ে থেকে রকডেইল হয়ে ইস্টউডের দিকে ছুটে, চোখের পর্দায় পিছনে হটে যায় পূর্ব পরিচিত রাস্তার ধার। রাতের আলোয় টোঁটোঁ করে স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায় কয়েক জোড়া চোখ। বর্ষবরণে সার্কুলার কীতে সম্মিলিত চিৎকার, "দোস্ত কে জানি গোলাপ জল ছিঁটায় রে"। অনেক গুলো দিনের শেষে অকারণে হেসে কুটিকুটির খেলা চলে অনবরতঃ। অক্লান্তিকর ঘূর্ণন শেষে ক্লান্ত দেহের ঠাঁই হয় ফেরৎ জাহাজের মোলায়েম আসনে। পরিচিত বিমর্ষ মুখ গুলোকে পাশ কাটিয়ে দৈত্যাকার জাহাজ হ্যাঙ্গার ছেড়ে বেরিয়ে আসে। গোধূলির আলোতে উপর থেকে আবারো বিদায় জানানো হয় কিংসফোর্ড স্মিথ ইন্টারন্যাশনালকে...!