Saturday, November 04, 2006

জেল হত্যা দিবস!!



গতকাল ছিলো ৩রা নভেম্বর, বাঙালী জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর, কলঙ্কময় দিন গুলোর একটা। জেল হত্যা দিবস!!

৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালো রাতের পর খন্দকার মোশতাক তার মন্ত্রিসভায় যোগ দেবার জন্য আহ্বান করেণ বঙ্গবন্ধুর চার ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে। বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে বের করে নিজ পায়ে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখা এবং দেখানো এই মানুষ গুলো খন্দকার মোশতাকের সেই আহ্বান ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেণ।

প্রত্যাখাত হয়ে খন্দকার মোশতাক গ্রেফতার করেণ চার নেতাকে। ভাগ্য তার দিকেও যায় নি। উতখাত হয়ে যেতে হয় তাকে ২রা নভেম্বর। কিন্ত ঠিক তার পরপরই ১৫ আগস্টের ঘাতকেরা কারাগারের নিউসেলের ভেতরে ঢুকে ব্রাশ ফায়ার করে চার জাতীয় নেতার উপর। শুধু তাই নয়, তাদের হীন, অসুস্থ মানসিকতার তাড়নায় চার নেতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বেয়নেট নিয়ে।

এই ৩রা নভেম্বর, বাংলাদেশের জন্মের পর স্বাধীন বাংলার মাটিতে প্রাণ দিতে হলো বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। তাদের অপরাধ কী ছিলো? একটা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা! যুদ্ধে বিধ্বস্ত একটা দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখানো! জাতির মহান নেতা, যার আহ্বানে সারা জাতি একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলো- তার প্রতি আনুগত্য দেখানো!

জেলহত্যার সেই দিনটি থেকে ২১টা বছর এর বিচারকাজ স্থগিত করে রাখা হয়। পূণর্বাসিত করা হয় হত্যাকারীদের। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এর বিচার কাজ শুরু হয় এবং ২০০৪ সালে রায় ঘোষনা করা হয়। চার্জশীটে উল্লিখিত ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনের সাজা হয়। এর মধ্যে ৩ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তার ফাঁসি এবং বাকি ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার যথাযোগ্য প্রমানের অভাবে মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে যায় বিএনপি নেতা কে এম ওবায়দুর রহমান, জাতীয় পার্টি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক মন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর, নজরুল ইসলাম মঞ্জুর এবং মেজর (অব:) খায়রুজ্জামান।

হত্যাকান্ড সংগঠিত হবার এতোগুলো বছর পরে ঘোষিত মামলার রায় নিয়ে চার জাতীয় নেতার পরিবার পরিজন সন্তুষ্ট নন মোটেই। তাদের মতে এ রায় ছিলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, এখনো পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে শাস্তি দেয়া হয় নি!

No comments: