Wednesday, December 05, 2007

আজ নয় গুনগুন গুঞ্জন প্রেমে

সাগরিকা দেখার পর থেকেই ধাক্কা খেয়ে প্রেমে পড়ার নেশা পেয়ে বসে। সেই স্কুলবয়সী আমি থেকে আজকের আমি, এখনো সেই ধাক্কার অপেক্ষা আমার। আমি জানি, জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্তও এই ধাক্কার অপেক্ষায় থাকা হবে আমার। জীবদ্দশায় দরোজা খুলে কিংবা দেয়ালের ওপাশ থেকে ছুটে আসা সাগরিকার মতো টানাটানা কাজল চোখের কারো সাথে আচমকা ঢুঁশ লাগবে না। মিষ্টি হাসি দিয়ে কেউ আর আমাকে তার পরশে সিক্ত করতে পারবে না। লাশকাটা ঘরে আমার বুক চিরলেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা কৈশোরের সেই গোলগাল মায়াবী মুখের কিশোরিটিকে। যাকে মনে করে 'সব ভালো গান' শোনা হতো তখন। হিম বৃষ্টির ঝমঝম ধ্বনিকে মনে হতো তার রিনিকঝিনিক নূপুরের শব্দ। মগ্ন হয়ে রইতাম এমন কি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকেও। একসময় পরিবর্তন এলো মনে। এক চোখে প্রেমে পড়ার তুমুল প্রত্যাশা নিয়ে আরেক চোখে উঠে এলো সমাজ বদলের স্বপ্ন। ইঁচড়ে বয়সে হাতে উঠে গেলো জন ডানের কবিতার বইয়ের পাশাপাশি ফিদেল ক্যাস্ট্রোর জীবনী। হাভানা সিগার চোখে গেভারার পোস্টারের দিকে চোখ, কানে বেজেছে ভূপেনের আমি ভালোবাসি মানুষকে।

লতার একটা গানের ব্যাপারে আসি। গানটায় বারবার ফিরে আসে কৈশোরের মায়া মুখের সেই কিশোরিটি। আমার সঙ্গে খুনসুটি করে, লুকোচুরি খেলে স্মৃতির ঘুলঘুলিয়ায়। খানিক থেমে কাজল দেয়া ডাগর চোখ দুটো মেলে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমি আদৌ প্রেমে পড়েছি কীনা!

আমি তার দিকে মুচকী হাসি দেই, আমার কখনোই সাগরিকার সাথে ধাক্কা খাওয়া হলো না, আমার কখনোই এতো শখের প্রেমে পড়া হলো না। আমার কানের পরে বহুবছর পর আবার লতা, সেই ঝিমমূখর বৃষ্টি, সেই দিনগুলির ঘ্রাণ!

No comments: