Friday, June 29, 2007

নস্টালজিক ভাবনায় নস্টালজিয়া

থ্রী-তে থাকতে এক বিকেলের কথা। তখন বন্দর উপজেলা কমপ্লেক্সের সব পোলাপাইন ইউএনও'র বাসার পাশে বিকেল হলেই ভিড় করে। আমার সমবয়সী বলতে ছিলাম আমরা মাত্র দু'জন। শিমু আর আমি। এক বছর পরের আছে শরীফ, শিমুর ছোট ভাই রতন। বড়রা তখন ভাইয়াদের সাথের। ওদের গ্রুপটা বিশাল। আলমচাঁন হাইস্কুলে যায় সবাই। তো আমরা খেলতে গেলে প্রায়ই যুঁথী আপা আমাদের ধরে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতো, "আচ্ছা এরা কি দুধ খেয়ে ভাত খায়, নাকি ভাত খেয়ে দুধ"?

অনেকগুলো দিন কথাটার মানেই ধরতে পারি নি। কারণ, বাকী বড়রা যে উত্তরই দিতেন, আমরা খেলায় জায়গা পেতাম। কিন্তু স্ট্যাটাসে খানিক হেরফের হতো। আন্ডাবাচ্চা আমরা সেদিকে মনই দিতাম না। এক হাতে হাফপ্যান্ট টেনে ধরে আরেক হাত নেড়ে নেড়ে দৌড়াতাম সারা মাঠময়। গলা ছেড়ে চিৎকার করতাম শুধু শুধুই।

ফাইভে ওঠার পর শ্যামলরা এলো আমাদের বাসার ওপরের তলায়। আমার ক্লাসের শ্যামল আর তার ছোট বোন হাসিনা। জুয়েল ভাই, যুঁথী আপারা ততদিনে চলে গেছেন অন্য জায়গায়। কাজেই আমাদের কঁচিকাঁচা গ্রুপের ততদিনে খেলায় প্রমোশন হয়েছে। এখন আর সেই কোড কথা শুনতে হয় না, ডাইরেক্ট খেলাতে নিয়ে নেয়। কিন্তু তখনো কেনো যেন বুঝে উঠতে পারিনি সেই কথার আড়ালে কী ছিলো!

---------

ছোট মামার বিয়ে হয় সেসময়ই কোন এক বছর। সব কিছু মনে নেই শুধু বিয়ের দিনের একটা কথা মনে আছে। গেটে অনেক ঝামেলা হচ্ছিলো। হয় না, টাকা পয়সা নিয়ে? ঐরকম। আমিতো আর জানি না, আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বরবেশী ছোটমামাকে দেখি নদীর ঢেউয়ের মতো ভীড়ের তালে একবার এদিকে দোলেন আবার ওদিকে। ছোট মামার বন্ধু শহিদুল মামা সেদিন তাঁর বিশাল বপু দিয়ে নাদুসনুদুস দোস্তকে রক্ষা করেছিলেন। সেই থেকে শহিদুল মামা আমার চোখে হিরো! বিয়ের পরদিন সকালে ছোট মামার কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বলেছিলাম, আর কখনো ঐ বাড়িতে গেলে শহিদুল মামাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন, তাহলে ওরা আর আপনাকে ওরকম করে এদিক-ওদিক দোলাতে পারবে না। সেদিন আমার ভয়ার্ত কথা শুনে ছোট মামা সশব্দে হাসিতে ফেটে পড়েছিলেন আর সবাইকে আমার কথা হুবহু বলেছিলেন। বাকীরাও হেসেছিলো, আমি বোকা হয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে ভাবি, "এমন সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে কেউ হাসে"?

No comments: