গুরুচন্ডালী - ০০৩
গত কয়েক বছর ধরে একুশে ফেব্রুয়ারী আমার মনে থাকে অন্য আরেকটা কারণে।নিরানব্বই এর একুশে ফেব্রুয়ারী একটা বৌভাত হয়ে ফিরছিলাম। পরের দিন বৃটিশ কাউন্সিলে আংরেজী পরীক্ষা সিস্টেম আয়ত্বের নিরস জিনিষ গিলতে হবে বিরস বদনে, সরস জেনি'র পাশে বসে!
আজকে ঘুম ভেঙেছে দেখে ছোট ভাই জিজ্ঞেস করলো দিনটা মনে আছে কি না! অনেক ভেবেও মনে করতে পারিনি আজকের দিনটার শানে নুযুল কী!
মেসেঞ্জারে পরিচিত একজনের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। কথার কথা বলতে কেবল প্যাচানি আর খোঁচানি। এই হাওয়াসন্তানের সঙ্গে প্রথম সাহস করে দেখা করতে যাই হিলসডেইল, বুকে বিশাল সাহস সঞ্চয় করে। অষুধের দোকানে ঢুকে দেখেই বুঝতে পারি কোনটা সে! সঞ্চিত সাহস ফুরুৎ করে সব বেরিয়ে গেলে বুঝতে পারি কথা বলার শক্তিও খুইয়েছে শরীর। কোনো রকমে পাশে সরে এসে বরফঠান্ডা ফাউন্টেন থেকে ঢকঢক করে কয়েক গেলাস শীতল পানি গিলি। সেদিনটাকে ক্যালেন্ডারে কোথাও ফেললে সেটা দেখাবে ফেব্রুয়ারীর ২২ তারিখেরই আশে পাশে কোথাও। কিন্তু সেটাও পূর্বোক্ত ঘটনায় ধর্তব্য না।
বারউড স্কুলের বৈশাখী মেলায় বটগাছের তলে লাল পাড়- সাদা জমিনের শাড়িতে পুতুল পুতুল মুখ করে দাঁড়িয়ে দরদর করে ঘামতে দেখেছি। হাতে টিস্যু নিয়ে সামনে ধরে দাঁড়ানো হয় নি। ফেব্রুয়ারীর সাহসের অভাবটা এখানেও অনুভূত হয়েছিলো আগুনভাবে। এখনো চোখের সামনে থেকে বটগাছের ছায়ায় দাঁড়ানো সে মূর্তিটা সরে না!
|
একটা গানের জন্য ঘ্যানর ঘ্যানর করছে সেই কখন থেকে, ব্রেক দিয়ে দিয়ে। শর্ত জুড়ে দিয়েছি বলে গোল টেবিলে বসে নেগোসিয়েশন করছে। একেকটা বার্তায় যখন চোখের ডান কোণের কিছুটা জায়গা হলদে হয়ে ওঠে, কানের কাছে মাউথ অর্গানটা যখন বেজে ওঠে, তখন আমিও ২২ ফেব্রুয়ারীর কারণটা তালাশ করতে একবার বৌ-ভাত, একবার ঢাকা, একবার হিলসডেইলের সেই ওষুধের দোকান আরেকবার মেলা মাঠের সেই বটগাছটার নিচে চলে যাই- এক দৌঁড়ে!
No comments:
Post a Comment