Wednesday, July 02, 2008

গরমের কিচ্ছা

গরমে জান খান্দান!

২০০৬ এর পরে এই প্রথম আউলাটক্কর গরম পড়ছে। গরম কি গরম, যেমন তেমন গরম? পরনের কাপড় খুলে ম্যারাথন না হলেও ৪০০ মিটার রীলে দৌড় দিতে মন করতেছে।

এজ ইয়্যুজুয়াল তাড়াহুড়ায় হাতের কাছে পাওয়া টি-শার্টটা পরেই বেরিয়ে গেছি ঘর থেকে। এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীর অষ্টমাভুলের একটা হয়েছে এইটা, সিনথেটিকের টি-শার্ট পরাটা। মনে হচ্ছে পিঠের সাথেই চুল্লিতে কিছু একটা তন্দুরীর ন্যায় ভাজা হচ্ছে, কাঁধে জ্বলন্ত কয়লার একটা বিশাল বস্তা নিয়ে হাঁটছি! এই অবস্থায় মাথামুথা ঠিক রাখা দায়। হঠাৎ চরম ইচ্ছা হতে লাগলো টি-শার্টটা ঘড়াৎ করে খুলে ফেলি। নিচে স্যান্ডো আছে, সমস্যা না। আবার ভাবলাম, টি-শার্ট খুললে তো খালি স্যান্ডোটা ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে না। অবশ্য কঙ্কালের অবয়বটা বুঝা গেলেও যেতে পারে।

মনটা শান্ত হলো দেশের কথা চিন্তা করে। দেশেতো এর চাইতেও পাগলাগরম। সেখানে মানুষ নিশ্চই আর বস্ত্রহীন হয়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের প্রস্তুতি নিচ্ছে না! এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে দেখলাম আমার মোটা মাথায়ও ভালো একটা জিনিষ খেললো। এই যে এই অসহ্য গরম লাগা, কম তাপমাত্রায়ও বস্ত্রহীন হয়ে পড়ার আকাংখা, এর পেছনে আসলে কারণ কী! কারণ আর কিছুই না, "ললনা"।

স্কুলে, গরমের দিনে ক্লাস করাটা বিরাট আজাবীয় মনে হতো। একেতো কো-এড ক্লাসে পোলাপাইনের ঘাপলাঘাপলি তারউপর নাই কোনো বাতাসদানযন্ত্র, আর বাইরে চলতো চৈত্রের চুড়ান্ত তাপদাহ। তো এমন একদিন ক্লাসে কী নিয়ে কথা হচ্ছে হঠাৎ এক ছেলে বলে উঠলো স্যার গরম লাগে কারণ মেয়েরা কথা বলে বেশি। স্যার বলেন, বেশি কথা বলার সাথে গরমের কী সম্পর্করে? পোলা কয়, স্যার মেয়েরা কথা কয় আর তাদের পেটের ভেতর থেকে ভুকভুক করে গরম বাতাস বের হতে থাকে। সেই গরম বাতাসই ক্লাস গরম করে ফেলে!

এখানকার মেয়েরা আরেক কাঠি সরেস। কথা বলার ইচ্ছার পাশাপাশি তাদের বস্ত্রের সংকুলানের তীব্রতাও প্রবল। একেতো গরমে চান্দি ফাটে তার উপর চোখের সামনে দিয়া ফুলচন্দন মার্কা স্বল্পবসনা ললনারা ইয়ে দুলিয়ে হেঁটে গেলে কার আর শীতল লাগে!

আশার কথা হলো, এই রিপোর্ট লেখার সময় আকাশ কালো করেছে কিঞ্চিৎ। মৃদুমন্দ সমীরণ না হলেও মোটামুটি দমকা স্টাইলেই হাওয়া দিচ্ছে। গাত্রউদোম করা এই গরমে আপাতত স্বস্তির খবর এটাই!

No comments: