Thursday, March 15, 2007

দিবা-রাত্রির গল্প

নষ্টালজিয়া, প্রবাসী কিম্বা পরবাসী বাঙালীর তৃষ্ণাকাতর হৃদয়ে এক ফোঁটা বৃষ্টি-বারির ছোঁয়া। নষ্টালজিয়ার ম্যাজিক কার্পেটে চড়ে অভুক্ত মন এক মুহূর্তে ছুটে যায় গাঁয়ের সেই পথটি ধরে, সেই বাড়িটির সামনে। যে বাড়ির রাণ্নাঘরে মা সযতনে উনুনের পরে ভাতের হাঁড়ি চড়ায় ফি বেলায়।

মায়ের হাতের বানানো আলু ভর্তায় গাছের কাগজি লেবু চটকিয়ে গরম ভাত খাওয়ার পরম স্বাদ অন্য কোন কিছুতেই পূরণ হবার নয় নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন কোন বাঙালী মায়ের সন্তানের। ম্যাকডোনালডসের সুস্বাদু, সুদর্শন রয়েল টিএস ও ফেল মারে অতি সাধারন ভাবে রাঁধা মায়ের হাতের মুরগীর সালুনের কাছে। লাল লাল ঝোলের মুরগীর সালুন, ঘি দিয়ে ভাজা আলু ভর্তা, লেবু আর মায়ের উদ্বিগ্ন চোখের চাহনী সহযোগে কতোদিন খাইনা পেট পুরে, গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে!

পরদেশের বাঙালী রেস্টুরেন্ট গুলোও পরবাসীই হয়। সেখানে মসলা গুলো একই থাকলেও কোথায় যেনো কী নেই। আসলেই তো মায়ের হাতের মমতার ছোঁয়া তো সুদূর পশ্চিমের এই রেস্তোঁরা গুলোয় পাওয়া দুষ্কর। কখনো সখনো এরকম কোন এক রেস্টুরেন্টে দেখা মিলে অরণ্যকেশী লাবণ্যের। না, শেষের কবিতার লাবণ্য না, একেবারে সাবঅলটার্ণ যুগের লাবণ্য, একজন রাত্রি!

এই রাত্রির লাবণ্যময় চোখের গভীরতা, চিবুকের গাঢ়ত্ব কিংবা চুলপ্রপাতের মাঝে ডুব দিয়ে একনিমিষেই চলে যাওয়া যায় নিজের রচিত কোন সমান্তরাল পৃথিবীতে। যেখানে সে বিকেলের চায়ের সাথে ডালপুরী ভেজে উপস্থিত করে গ্রীনরোডের কোন এক ছোট্ট এ্যাপার্টমেন্টে। তাঁর লাল-সবুজ গ্রামীন চেকের শাড়ির আঁচলে কখনো গুটিসুটি খায় ছোট্ট ছেলে, আর কখনো আলতো করে টান দেয় নাস্টালজিয়ার কার্পেটে ভাসতে থাকা পরবাসী বাঙালী।

হঠাৎ করেই মিস্টি সম্বোধনে অ্যালিসের ওয়ান্ডার ল্যান্ড থেকে ফিরে আসে ক্ষুধায় কাতর নস্টালজিক মানুষটি। টের পায় রেস্টুরেন্টের খাবার সামনে ঠান্ডা হয়ে গেছে, খাওয়ার ইচ্ছে উবে গেছে সেই কখন। জানাহয়, এতোক্ষণ ধরে স্বপ্নের জাল বুনে চলা সঙ্গীটির নাম জানা হয় রাত্রি না, দিবাও না। অরণ্যকেশীর নাম আসলে দ্বীপান্বিতা।

এগিয়ে চলে মাহির সাথে দ্বীপান্বিতার কথোপকথন

No comments: